বাংলা বিভাগ সম্পর্কে
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর পরই গাজীপুরের টংগীতে ১৯৭২ সালে অত্র এলাকার সচেতন শিক্ষানুরাগী জনগণের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় টংগী কলেজ যা ১৯৮৮ সালে সরকারিকরণ হলে নাম হয় ‘টংগী সরকারি কলেজ’। শুরুতে কলেজটিতে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির কার্যক্রম থাকলেও পরবর্তীতে ১৯৮৬-১৯৮৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক শ্রেণির কার্যক্রম চালু হয়। তখন থেকেই স্নাতক পর্যায়ে বাংলা পাঠদান চলতে থাকে । ১৯৯৬-১৯৯৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজে স্নাতক পর্যায়ে সম্মান ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হয়। বাংলা বিভাগেও স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হয় একই সেশনে।
বাংলা বিভাগে বর্তমান শিক্ষক পদের সংখ্যা সাতটি তবে কর্মরত আছেন নয় জন । এখানে বিভাগীয় প্রধানের পদটি অধ্যাপকের। সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে সর্বজনাব কাজী রোমেনা খাতুন, বিমল মল্লিক ও মোঃ কামরুল হাসান, সহকারী অধ্যাপক হিসেবে জনাব আফরোজা বেগম ও জনাব নাজমা সুলতানা এবং প্রভাষক হিসেবে সর্বজনাব ফাতেমা তুজ জাহান, সানজিদা আক্তার, মোঃ মফিজুল ইসলাম কর্মরত। এছাড়াও সেমিনার সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন মোঃ শামীম উদ্দিন ভূইয়া। চলমান জগতের অমোঘ ধারায় এই বিভাগে কেউ আসছেন আবার কেউ বা তাদের সমগ্র জীবন সাধনার পুণ্য ফসল স্নেহাস্পদ কোমলমতি বিদ্যার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দিয়ে কর্মক্ষেত্র থেকে অবসর নিচ্ছেন। এ বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ অত্যন্ত শ্রম, নিষ্ঠা ও দায়িত্বের সাথে জ্ঞান সাধন ও শিক্ষার আদর্শকে বিদ্যার্থীদের মাঝে অকাতরে বিলিয়ে যাচ্ছেন। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ছয়শত । শিক্ষকবৃন্দের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও নিরন্তর সার্বিক সহযোগিতায় বিভাগে জ্ঞানদানের অনাবিল ও অনুকূল শিক্ষাবলয় গড়ে উঠেছে। তাই বিভিন্ন বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফলে শিক্ষার্থীদের থাকে অসামান্য সাফল্য। গত কয়েক বছরের অনার্স ও মাস্টার্সের ফলাফল উল্লেখ করার মতো । মাস্টার্স শেষপর্ব ও অনার্স চূড়ান্ত পরীক্ষায় অনধিক কুড়ি জন শিক্ষার্থী ‘জিপিএ ৩’ এর অধিক সূচকপ্রাপ্ত হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বিভাগ কৃতী শিক্ষার্থীদের প্রতি বছর সংবর্ধনার ব্যবস্থা করেন । শ্রেণি কার্যক্রমের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমেও বিভাগের শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। শিক্ষকদের দক্ষ পরিচালনা ও সহায়তায় নবীনবরণ, বর্ষবরণ, বসন্তবরণ, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, পিঠা-উৎসব, একুশের দেয়াল পত্রিকা, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপনে শিক্ষার্থীরা সানন্দে অংশগ্রহণ করে থাকে। প্রতিবছর এ বিভাগের তত্ত্বাবধানে শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী স্থানে শিক্ষাসফর করে থাকে। দেশের প্রকৃতি, বৈচিত্র্য, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তাদের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে। বাংলা বিভাগের রয়েছে প্রায় ১২শতাধিক বইয়ের সমৃদ্ধ সেমিনার। প্রতিবছরই প্রয়োজনীয় গ্রন্থ ক্রয়ের মাধ্যমে এর কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রেণি প্রয়োজনীয় ছাড়াও আছে দুর্লভ বই। একজন শিক্ষক ও সেমিনার সহকারীর সহায়তায় এর কার্যক্রম পরিচালিত হয় । তবে এই বিভাগের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর তুলনায় সেমিনার কক্ষে স্থান স্বল্পতা আছে, আছে শ্রেণিকক্ষের সীমাবদ্ধতা ।